মাদক ব্যবসা কোন সাধারণ মানুষের পক্ষে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে করা কখনোই সম্ভব নয়। সমাজের যে সাধারণ মানুষটিকে মাদক ব্যবসা করতে দেখা যায় তার পেছনে হয়তো প্রশাসনিক অথবা রাজনৈতিক সহায়তা থাকে। সমাজের একজন ক্ষমতাধর ব্যক্তি কখনো নিজে হাতে মাদকের ফেরী করেনা, তারা এজেন্ট হিসেবে বেছে নেয় সমাজের বেকার হতাশাগ্রস্ত যুবকদের।তারাই এই যুবকদের দিয়ে যুব সমাজের হাতে মাদক তুলে দিয়ে যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়।প্রশাসনের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতাদের অর্থ বিত্ত বৈভবের গোপন সূত্র খুঁজতে গেলে দেখা যায় এর মূলে রয়েছে রাষ্ট্রীয় ভাবে নিষিদ্ধ কোন অবৈধ ব্যবসা।মাদক যখন কোন দেশের সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে সেখানে প্রশাসনের সহায়তা থাকে, মাদক যখন স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয় সেখানেও প্রশাসনের সহায়তা থাকে । এই সহায়তা যদি শুরু থেকে না করা হয় এবং শক্ত হাতে দমন করা হয় তাহলেতো এর বিস্তার ঘটেনা। মাদকের অভিযানের নামে সংশোধনের সুযোগ না দিয়ে বিচার বহির্ভূত ভাবে মানুষ হত্যার উৎসব করার প্রয়োজন হয়না ।
এই প্রসঙ্গে আমার দেখা বাস্তব অভিজ্ঞতার একটু বর্ণনা করি, আমার জেলা রাজবাড়ীতে এক সময় ভারতীয় ফেনসিড্রিলের রমরমা ব্যবসা হতো । যারা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের মাঝে মাঝে জীবন যাত্রার হালচাল দেখে বেশ ধনী মনে হতো। কিন্তু এমন সুখের সময় হঠাৎই পুলিশ এদের মাদক ব্যবসার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যেতো, তখন মাদক ব্যবসায়ীর স্ত্রী নিয়মিত থানা কোট কাচারিতে দৌড়াদৌড়ি করতো। এভাবে মাস দুয়েক ফেনসিড্রিল ব্যবসার জমানো সব টাকা পুলিশ, উকিল, আদালতের পেছনে খরচ করে স্বামীকে জেল থেকে জামিনে মুক্ত করে বের করে নিয়ে আসতো। বেরিয়ে আসার পর ওপার থেকে আবার সীমান্ত প্রহরীদের টাকা পয়সা দিয়ে ট্রেনে করে জি আর পি পুলিশের সহায়তায় ফেনসিড্রিলের চালান নিয়ে আসতো। আবার রমরমা ব্যবসা, নগদ টাকার উড়াউড়ি। সেই টাকার গন্ধে আবার পুলিশের হানা। আবার স্ত্রী’র কোট কাচারিতে দৌড়াদৌড়ি, থানা পুলিশ, উকিলের পেছনে ব্যবসার জমানো সমস্ত টাকা ঢেলে প্রিয় স্বামীকে মুক্ত কড়ে নিয়ে আসা। ওই মাদক ব্যবসায়ীকে পুলিশ বারবার মাদকসহ গ্রেপ্তার করলেও কখনো সংশোধনের সুযোগের জন্য মাদক আইনে সাজা ভোগ করে দীর্ঘদিন কারাবাস হতে দেখিনি।অর্থাৎ পুলিশের হাতে ধরা পড়া, জামিনে ছাড়া পাওয়া, আবার ব্যবসা করা এটাই ছিল তাদের জীবনের নিয়মিত অংশ ।যারা এই ব্যবসা করতো তারা মূলত কিছুদিন ইলিশ মাছ, মাংস দিয়ে ভাত খেত আর ভালো কাপড় পড়তো,কিন্তু পাকা বাড়ী বানাতে পারতোনা কারণ, নগদ জমলেই পুলিশ হানা । ওর জীবন ঝুঁকির টাকায় হয়তো পুলিশ অফিসারের ফ্ল্যাটের কিস্তি পরিশোধ হতো, রাজনৈতিক নেতার ভাই কিংবা বোন জামাইয়ের টাকার বাণ্ডিলের উপর বাণ্ডিল জমতো, কোটের উকিলের রুটি রুজি ভালো হতো। আর এই কারণেই ওই সব মাদক ব্যবসায়ীদের কখনো সংশোধনের জন্য সাজার ব্যবস্থা করা হতোনা। ওর সাজা হলে পুলিশ, রাজনৈতিক নেতা, উকিলদের উপরি আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যায়।
নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে মাদক ব্যবসা মূলত প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে মাদক বিক্রেতা,আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি, এই তিনের সমন্বয়েই সম্পন্ন হয়ে থাকে।দেশে যখন কোন বিশেষ অভিযান শুরু হয় তখন দেখা যায় যে লোকটা মাদক ব্যবসার টাকায় ইলিশ মাছ আর মাংস খায় ওই মারা পড়ে, যাদের মাদকের টাকায় ফ্ল্যাটের কিস্তি পরিশোধ হয় তাদের গুলিতে এবং টাকার বাণ্ডিলের পর বাণ্ডিল রাখা মহৎ জনদরদী নেতাদের পরিকল্পনায়।দেশের ক্ষমতাসীনরা যদি জনদরদী হয়ে থাকে তবে হঠাৎ করে বিশেষ অভিযানের প্রয়োজন আছে কি? তাদের সুশাসনের ফলে মাদকসহ আইন শৃঙ্খলা অবস্থা সারা বছর স্বাভাবিক থাকবে।সরকারের উদ্দেশ্য যদি মহৎ হয়ে থাকে তাহলে একটি জীবন্ত মানুষকে হত্যা না করে তাকে বিচারের সম্মুখীন করা হোক এবং মাদকের মূল হোতাদের আবিষ্কারের জন্য তাকে সরকারের পক্ষ থেকে নির্ভয় দিয়ে মিডিয়া এবং সমাজ সচেতন মানুষের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় আইনে বিচারের ব্যবস্থা করা হোক। রাষ্ট্র জনগণের কাছে পিতা মাতার মতো,সন্তানদের ভুল শুধরে সঠিক পথ দেখানোই তার দায়িত্ব। কিন্তু আমদের রাষ্ট্র অভিভাবক আমাদের ভরণপোষণের ক্ষমতা রাখেনা, রুটি রুজির ব্যবস্থা করতে পারেনা,অথচ যখন নিজহাতে হত্যা করার ধৃষ্টতা দেখিয়ে বর্বর উৎসবে মেতে ওঠে, তখন বুঝতে হবে আমাদের রাষ্ট্র মাতা সৎ পিতার অধীনের সংসার করছে। হত্যা যদি সমাধানের পথ হয় তবে জেল গেটের ফটকে লেখা “রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ” এ জাতিও নীতিবাক্যকে হাস্যকর মনে হয় এবং এমন প্রতিষ্ঠান নিষ্প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
সরকার যদি সত্যিই আন্তরিক ভাবে বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত করতে চাই তাহলে প্রথম পদক্ষেপ হবে সরকারে ক্ষমতার মধ্যে থেকে কারা মাদক ব্যবসার পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদেরকে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।এই পদক্ষেপ কার্যকর করতে পারলে মাদক সমস্যার ৬০% সমাধান। দ্বিতীয়ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সৎ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে তৈরি তদন্ত কমিটির মাধ্যমে খুঁজে বের করতে হবে বাহিনীর কোন সদস্যের মাদক ব্যবসার সহযোগিতায় যোগসাজশ রয়েছে এবং প্রমাণিত অসৎ সদস্যদের বাহিনী থেকে চাকুরীচ্যূতির মাধ্যমে বের করে দিতে হবে। এতে ৩০% সমাধান মিলবে।বাকী দশ ভাগ সমস্যার সমাধান মিলবে , মাঠ পর্যায়ে যারা মাদক সেবীদের নিকট সরাসরি মাদক পৌঁছে দিয়ে অর্থ উপার্জন করে তাদেরকে ঝটিকা অভিযানের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সংশোধনের সুযোগ দেয়া।
এই প্রসঙ্গে আমার দেখা বাস্তব অভিজ্ঞতার একটু বর্ণনা করি, আমার জেলা রাজবাড়ীতে এক সময় ভারতীয় ফেনসিড্রিলের রমরমা ব্যবসা হতো । যারা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের মাঝে মাঝে জীবন যাত্রার হালচাল দেখে বেশ ধনী মনে হতো। কিন্তু এমন সুখের সময় হঠাৎই পুলিশ এদের মাদক ব্যবসার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যেতো, তখন মাদক ব্যবসায়ীর স্ত্রী নিয়মিত থানা কোট কাচারিতে দৌড়াদৌড়ি করতো। এভাবে মাস দুয়েক ফেনসিড্রিল ব্যবসার জমানো সব টাকা পুলিশ, উকিল, আদালতের পেছনে খরচ করে স্বামীকে জেল থেকে জামিনে মুক্ত করে বের করে নিয়ে আসতো। বেরিয়ে আসার পর ওপার থেকে আবার সীমান্ত প্রহরীদের টাকা পয়সা দিয়ে ট্রেনে করে জি আর পি পুলিশের সহায়তায় ফেনসিড্রিলের চালান নিয়ে আসতো। আবার রমরমা ব্যবসা, নগদ টাকার উড়াউড়ি। সেই টাকার গন্ধে আবার পুলিশের হানা। আবার স্ত্রী’র কোট কাচারিতে দৌড়াদৌড়ি, থানা পুলিশ, উকিলের পেছনে ব্যবসার জমানো সমস্ত টাকা ঢেলে প্রিয় স্বামীকে মুক্ত কড়ে নিয়ে আসা। ওই মাদক ব্যবসায়ীকে পুলিশ বারবার মাদকসহ গ্রেপ্তার করলেও কখনো সংশোধনের সুযোগের জন্য মাদক আইনে সাজা ভোগ করে দীর্ঘদিন কারাবাস হতে দেখিনি।অর্থাৎ পুলিশের হাতে ধরা পড়া, জামিনে ছাড়া পাওয়া, আবার ব্যবসা করা এটাই ছিল তাদের জীবনের নিয়মিত অংশ ।যারা এই ব্যবসা করতো তারা মূলত কিছুদিন ইলিশ মাছ, মাংস দিয়ে ভাত খেত আর ভালো কাপড় পড়তো,কিন্তু পাকা বাড়ী বানাতে পারতোনা কারণ, নগদ জমলেই পুলিশ হানা । ওর জীবন ঝুঁকির টাকায় হয়তো পুলিশ অফিসারের ফ্ল্যাটের কিস্তি পরিশোধ হতো, রাজনৈতিক নেতার ভাই কিংবা বোন জামাইয়ের টাকার বাণ্ডিলের উপর বাণ্ডিল জমতো, কোটের উকিলের রুটি রুজি ভালো হতো। আর এই কারণেই ওই সব মাদক ব্যবসায়ীদের কখনো সংশোধনের জন্য সাজার ব্যবস্থা করা হতোনা। ওর সাজা হলে পুলিশ, রাজনৈতিক নেতা, উকিলদের উপরি আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যায়।
নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে মাদক ব্যবসা মূলত প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে মাদক বিক্রেতা,আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি, এই তিনের সমন্বয়েই সম্পন্ন হয়ে থাকে।দেশে যখন কোন বিশেষ অভিযান শুরু হয় তখন দেখা যায় যে লোকটা মাদক ব্যবসার টাকায় ইলিশ মাছ আর মাংস খায় ওই মারা পড়ে, যাদের মাদকের টাকায় ফ্ল্যাটের কিস্তি পরিশোধ হয় তাদের গুলিতে এবং টাকার বাণ্ডিলের পর বাণ্ডিল রাখা মহৎ জনদরদী নেতাদের পরিকল্পনায়।দেশের ক্ষমতাসীনরা যদি জনদরদী হয়ে থাকে তবে হঠাৎ করে বিশেষ অভিযানের প্রয়োজন আছে কি? তাদের সুশাসনের ফলে মাদকসহ আইন শৃঙ্খলা অবস্থা সারা বছর স্বাভাবিক থাকবে।সরকারের উদ্দেশ্য যদি মহৎ হয়ে থাকে তাহলে একটি জীবন্ত মানুষকে হত্যা না করে তাকে বিচারের সম্মুখীন করা হোক এবং মাদকের মূল হোতাদের আবিষ্কারের জন্য তাকে সরকারের পক্ষ থেকে নির্ভয় দিয়ে মিডিয়া এবং সমাজ সচেতন মানুষের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় আইনে বিচারের ব্যবস্থা করা হোক। রাষ্ট্র জনগণের কাছে পিতা মাতার মতো,সন্তানদের ভুল শুধরে সঠিক পথ দেখানোই তার দায়িত্ব। কিন্তু আমদের রাষ্ট্র অভিভাবক আমাদের ভরণপোষণের ক্ষমতা রাখেনা, রুটি রুজির ব্যবস্থা করতে পারেনা,অথচ যখন নিজহাতে হত্যা করার ধৃষ্টতা দেখিয়ে বর্বর উৎসবে মেতে ওঠে, তখন বুঝতে হবে আমাদের রাষ্ট্র মাতা সৎ পিতার অধীনের সংসার করছে। হত্যা যদি সমাধানের পথ হয় তবে জেল গেটের ফটকে লেখা “রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ” এ জাতিও নীতিবাক্যকে হাস্যকর মনে হয় এবং এমন প্রতিষ্ঠান নিষ্প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
সরকার যদি সত্যিই আন্তরিক ভাবে বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত করতে চাই তাহলে প্রথম পদক্ষেপ হবে সরকারে ক্ষমতার মধ্যে থেকে কারা মাদক ব্যবসার পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদেরকে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।এই পদক্ষেপ কার্যকর করতে পারলে মাদক সমস্যার ৬০% সমাধান। দ্বিতীয়ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সৎ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে তৈরি তদন্ত কমিটির মাধ্যমে খুঁজে বের করতে হবে বাহিনীর কোন সদস্যের মাদক ব্যবসার সহযোগিতায় যোগসাজশ রয়েছে এবং প্রমাণিত অসৎ সদস্যদের বাহিনী থেকে চাকুরীচ্যূতির মাধ্যমে বের করে দিতে হবে। এতে ৩০% সমাধান মিলবে।বাকী দশ ভাগ সমস্যার সমাধান মিলবে , মাঠ পর্যায়ে যারা মাদক সেবীদের নিকট সরাসরি মাদক পৌঁছে দিয়ে অর্থ উপার্জন করে তাদেরকে ঝটিকা অভিযানের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সংশোধনের সুযোগ দেয়া।