মঙ্গলবার, ৩১ মার্চ, ২০২০

মরণে ক্ষতি নাই,কিন্তু সে মরণ না হোক অবহেলার।

মরণে ক্ষতি নাই, কিন্তু সে সময় যেন একটি স্নেহকরস্পর্শ তাহার ললাটে পৌঁছে -যেন একটি করুর্ণাদ্র স্নেহময় মুখ দেখিতে দেখিতে এ জীবনের অন্ত হয়। মরিবার সময় যেন কাহারো একফোঁটা জল দেখিয়া সে মরিতে পারে।কথাগুলো বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের।
আজ হঠাৎ করেই কথাগুলো মনে পড়ে গেলো দেশে ঘটে যাওয়া কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনার খবর জেনে। মৃত্যুর ঘটনাগুলো অনেক হৃদয়বান মানুষের অন্তরে গভীর ভাবে নাড়া দিয়েছে।যাদের মৃত্যু পূর্ব মুহূর্তগুলো ছিল খুবই মর্মান্তিক।মানুষগুলো বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায়  হঠাৎ করেই খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।কিন্তু করোনা আক্রান্ত সন্দেহে তাদের কাছে এগিয়ে আসেনি কোন প্রতিবেশী, সাড়া মেলেনি সরকারের জরুরী নম্বরের ওই প্রান্তে বসে থাকা ব্যক্তির,ছুটে আসেনি স্থানীয় হসপিটালের এম্বুলেন্স, কোন চিকিৎসক।নির্বিকার চেয়ে থেকে সমাজ ও রাষ্ট্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিষ্ঠুর সমাজ থেকে বিদায় নিয়েছে।
আমরা অবশ্যই এই পরিস্থিতিতে সতর্ক থাকবো,তার মানে এই নয়, ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করবো।বরং আক্রান্ত ব্যক্তির শুশ্রূষার জন্য সোচ্চার হয়ে সরকারকে চাপ সৃষ্টি করবো।কে এই ভাইরাস বহন করে এনেছে,কার কারণে ছড়িয়েছে এসব নিয়ে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করা বোকামি। যে অবহেলায় অন্যের মৃত্যু হয়েছে, তেমন মৃত্যু যে আপনার দিকে ধেয়ে আসছেনা, তা আপনি কিভাবে নিশ্চিত ?
আপনি সরকারকে ভ্যাট দেন, ট্যাক্স দেন, রেমিটেন্স দেন কেন?আপনি চৈত্রের খররৌদ্রে ফসল ফলান,মিল কারখানায় ঘাম ঝরিয়ে পণ্য উৎপাদন করেন,নগর শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখেন,মাঝ দরিয়া থেকে মৎস্য আহরণ করেন কেন? কারণ, আপনার বিপদে রাষ্ট্রের সেবার হাত বাড়িয়ে দেবার আশায়, অবহেলায় মৃত্যু বরণের জন্য নয়।মনে রাখতে হবে,রাষ্ট্র সংঘের কাছে যে কোন প্রকার স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া আপনার মৌলিক অধিকার। করুণা বা দয়া নয়।

শনিবার, ২৮ মার্চ, ২০২০

গৃহবন্দী অতিষ্ঠ জীবন এবং খাঁচার পাখির কষ্ট।

আমরা কয়েক দিনের গৃহবন্দী জীবনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি।অথচ, আমরা অনেকেই বনের বিহঙ্গকে খাঁচায় বন্দী করে বাসার এককোণে ঝুলিয়ে রেখে আভিজাত্য দেখাই।যে পাখি উন্মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়ে বেড়ানোর মধ্যে আনন্দ খুঁজে পায়, সেই পাখিটিকে ছোট্ট একটি খাঁচায় বন্দী করে মাসের পর মাস ওর কষ্টের জীবন থেকে বন্য আনন্দ লাভের চেষ্টা করি।একবারও কি বোঝের চেষ্টা করি, পাখিটির অতৃপ্ত, অশান্ত মনে খাঁচার এপার ওপার ডানা ঝাপটিয়ে বেড়ানোর কষ্ট।
ছাত্রজীবনে রাজনৈতিক কারণে একবার হাজত বাসের অভিজ্ঞতা হয়েছিলো।জানতাম না এই বন্দী দশার অবসান কবে হবে।হঠাৎ করেই আইনের গ্যাঁড়াকলে পরাধীন হয়ে গেলাম।প্রতি মুহূর্তে স্বাধীনতার স্বাদটা কি?সেটা দারুণ ভাবে অনুভব করছিলাম।চব্বিশ ঘণ্টার লোহার শিকে ঘেরা বন্দী দশা থেকে মুক্ত হয়ে একটি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম,বনের পাখিকে কখনো খাঁচায় ঢুকিয়ে পুষবো না......।
বনের পাখিকে আদর দিলে খাঁচায় ঢুকিয়ে পোষার প্রয়োজন হয়না, এমনিতেই আপনার কাছে আসতে পারে। আমার বাসার বারান্দায় প্রতিদিন বিষ পঁচিশটি কবুতর, কাক,দোয়েল খাবার সন্ধান করে।বাসার উচ্ছিষ্ট খাবার ডাস্টবিনে না ফেলে বারান্দায় রাখা নির্দিষ্ট একটি পাত্রে রেখে দেই।ওরা মনের আনন্দে সেগুলো খেয়ে নেয়।আমি কখনো বারান্দায় বেড় হলে কবুতরগুলো দূর থেকে ছুটে আসে আমার কাছে,নির্ভয়ে ঘুরঘুর করতে থাকে পিছু পিছু।
ওরা ভাবে,আমি নই ওদের ভয়ের কোন জন,
আমি ওদের আপন
হয়তো এনেছে খাবার
হবে এবার ক্ষুধা নিবারণ .....।

শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০২০

একজনের সচেতনতার মধ্যে রয়েছে অন্যের জীবনের নিরাপত্তা (করোনা ভাইরাস)

বাংলাদেশর টিভি চ্যানেলগুলো এই দুর্যোগকালীন সময়ে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে।আমাদের দরকার ব্যাপক জনসচেতনতা এবং সেগুলো পালনে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা। প্রত্যেকটি টিভি চ্যানেল যদি তাদের প্রচারিত অনুষ্ঠানের মাঝে মাঝে করোনা ভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষার উপায় ও করণীয় বিষয় সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনগুলো প্রচার করতে থাকে তাহলে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষগুলো মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে সারা জাগানো ভূমিকা রাখবে।উন্নত বিশ্বের আক্রান্ত দেশগুলোর ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়াগুলো এভাবে প্রচার অভিযান চালাচ্ছে।
মেডিকেল কলেজের ছাত্র সহ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্ররা যদি বিভিন্ন ফেজবুক গ্রুপের মাধ্যমে সচেতনতা মূলক প্রচার অভিযান চালায় সেটি তরুণ সমাজকে সচেতন করতে বড় ভূমিকা রাখবে।
এই বিপর্যয় রোধে যাদের সামর্থ্য রয়েছে আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসার তারা বিভিন্ন ভাবে সমাজর আপামর মানুষ ও রাষ্ট্রের পাশে দাঁড়িয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান করবেন। এটি যেমন বড় একটি মহৎ কাজ, এর থেকে বড় মহৎ কাজ হচ্ছে প্রত্যেকে প্রত্যেকের থেকে জনবিচ্ছিন্ন ভাবে জীবন যাপন করা। কারণ যদি এই ভাইরাসটি আপনার শরীরে থেকে থাকে তাহলে শুধু আপনি অসুস্থ হবেন কিন্তু অন্যের সংস্পর্শে গেলে শুধু আপনার দ্বারাই সংক্রমিত হবে হাজার হাজার মানুষ ।সুতরাং হাজার হাজার মানুষের জীবন রক্ষার্থে আপানর নির্বাসিত জীবন যাপন ভূমিকা রাখবে এই মুহূর্তে একজন বীর যোদ্ধার ন্যায়।এখন একজনের সচেতনতার মধ্যে রয়েছে অন্যের জীবনের নিরাপত্তা।
সুতরাং, সচেতন হই এবং বিধি নিষেধ মেনে জীবন যাপন করি এবং করোনা ভাইরাস মোকাবেলার যুদ্ধে সফল হতে প্রত্যেকের ভূমিকা হোক সুশৃঙ্খল সৈনিকের মত।কারণ এই মুহূর্তে এই রোগের এক মাত্র প্রতিষেধক সচেতন হওয়া এবং মেনে চলা।

বৃহস্পতিবার, ২৬ মার্চ, ২০২০

রক্তাক্ত ৭১

রক্তাক্ত ৭১ 

রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ 

আর, যুদ্ধে যাবার প্রস্তুতি । 


রক্তাক্ত ৭১ 

২৫ মার্চে হায়েনার অপারেশন সার্চলাইট, 

আর, চট্টগ্রাম বেতারে স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র পাঠে 

 মেজর জিয়ার জিহ্বায় উচ্চারিত স্বাধীনতার ধ্বনি। 


রক্তাক্ত ৭১ 

কৃষক শ্রমিক ছাত্রের মুক্তিযুদ্ধে যোগদান 

আর, দেশ  মুক্তির স্বপ্ন । 


রক্তাক্ত ৭১ 

রণাঙ্গনে অস্ত্র,বারুদের দামামা  

আর, মুক্তিযোদ্ধার চোখে শত্রু হননের তীব্র জ্বালা। 


রক্তাক্ত ৭১

ভয়কে জয় করে শত্রু ঘাঁটির দিকে অগ্রসর 

আর, দেশের জন্য আত্মহুতি। 


রক্তাক্ত ৭১ 

ক্ষুধিত শিশুর আহাজারি, 

আর, বৃদ্ধার অসহায় আকুতি। 

সন্তানহারা মায়ের হাহাকার 

আর, হাজার হাজার বীরাঙ্গনার অবহেলিত মুখ।  


রক্তাক্ত ৭১

১৭৫৭ এর অস্তমিত স্বাধীনতাকে পুনরুদ্ধার। 

কোটি বাঙালীর শত বছরের লালিত স্বপ্নের প্রতিফলন। 


( সম্ভবত উপরের অনুভূতিগুলো লিখেছিলাম ১৯৯৯ সালের দিকে, যখন মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল ভাসা ভাসা)  

শনিবার, ২১ মার্চ, ২০২০

সচেতনতা ও সাবধানতা অবলম্বনই করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে আমাদের রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায়।

বাংলাদেশ যদি করোনা ভাইরাসের আক্রমণ মহামারীর দিকে ধাবিত হয় তাহলে প্রকৃত সত্য এই যে, চলমান করোনা ভাইরাসের তাণ্ডব মোকাবেলায় বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেভাবে পদক্ষেপ নিয়ে বাস্তবে কাজ করে চলছে, আমাদের জনসংখ্যা,সমাজ ব্যবস্থা,রাজনৈতিক পরিস্থিতি,জীবন যাপন প্রণালী ও রাষ্ট্রের কাঠামো বিচার বিশ্লেষণ করলে সরকারের এক শতাংশ সক্ষমতা নেই এই বিপর্যয় মোকাবেলার।সেই সাথে সরকারের সদিচ্ছার আন্তরিক কোন আচরণ এখন পর্যন্ত চোখে পড়ছে না।পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো যখন এই পরিস্থিতিকে যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করছে তখন আমাদের সরকার দেশে বঙ্গবন্ধুর শত বর্ষ পালন করল কোটি কোটি টাকা খরচে গান বাজনা, হাজার হাজার মানুষের জমায়েত করে আতসবাজি ফুটিয়ে। যা ছিল অশোভন এবং বর্তমান পরিস্থিতির পরিপন্থী।বঙ্গবন্ধু সারা জীবন গণমানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন।তার জন্ম শত বার্ষিকী উদযাপনের ঘোষিত বাজেটের অর্থ  যদি স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের জন্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয় এবং যে সব ডাক্তার ও নার্স করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবায় নিয়োজিত থাকবে তাদেকে উৎসাহিত করার জন্য অতিরিক্ত অর্থ প্রণোদনার জন্য ঘোষণা করত তাহলে মহিমান্বিত হয়ে উঠত এই মহান মানুষের জন্ম শত বার্ষিকীর দিনটি।মনে রাখতে হবে, মানুষ বেঁচে থাকলেই তার স্তুতি গাইবে। মানুষের জীবন হুমকির সামনে রেখে এই উল্লাসের মধ্যদিয়ে সরকারে থাকা দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের চরিত্র নতুন করে উন্মেষ ঘটেছে।ফাঁকা নির্বাচনে অভ্যস্ত হওয়ায় এই মুহূর্তকে পূঁজি করে আজ চলছে ঢাকা ১০ আসনের উপনির্বাচন এবং অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চালাচ্ছে চট্টগ্রামের সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন।সুতরাং সরকারের উপর নির্ভর না করে  করোনাভাইরাসের  বিরুদ্ধে সামাজিক ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলাই হবে আমাদের মোক্ষম অস্ত্র। মুখে বড় বড় কথা বলে হাতে তালি পাওয়ার সময় এখন নয়।সমস্যার সমাধান করতে দরকার বাস্তব উপাদান ও উপকরণ।এই মুহূর্তে আমরা যে ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছি তার সমাধান রয়েছে এক মাত্র সচেতনতা ও সাবধানতার মধ্যে।এই দেশে রাজনৈতিক পরিচয়ে খুনের আসামী হয়ে খালাস পেতে পারেন কিন্তু এই ভয়ংকর ভাইরাসে সংক্রমিত হলে কার  সুপারিশে জীবন বাঁচাবেন?ধর্ম,বর্ণ,শ্রেণী,পেশা,দল,মতাদর্শী সব শ্রেণীর মানুষই আজ এই মহামারীর সম্মুখীন।এমন এক বিপদের সম্মুখ সম্ভাবনার সম্মুখীন আমরা হয়েছি যখন অন্য রাষ্ট্রের সাহায্য পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম কারণ এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রতিটি দেশ নিজেদের জন্য ব্যস্ত রয়েছে।এই মুহূর্তে সকল দ্বন্দ্ব ভুলে গিয়ে আবার সেই বাহান্ন ও একাত্তরের মত সামগ্রিক ভাবে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে এক সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই করা ছাড়া আমাদের অন্য কোন পথ খোলা নেই।প্রত্যেকেই যার যার অবস্থান থেকে এখন সম্মিলিত ভাবে কাজ করতে হবে।এর মধ্যে অনেক ডাক্তার,এনজিও,সামাজিক সংগঠন,সমাজ সচেতন ব্যক্তি নানা সচেতনতামূলক দিকনির্দেশনা দিয়ে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন যা প্রশংসার দাবী রাখে।আমাদের উচিত দু থেকে তিন মাস এই সতর্কতার মধ্যে জীবন যাপন করা এবং বিশ্ব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মধ্যে থাকা।তবে ফেচবুকে এই সংকটকে কেন্দ্র করে  এক শ্রেণীর অসাধু চক্র মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমাদের দায়িত্ব এ ব্যাপারে সতর্ক হয়ে সঠিক দিক নির্দেশনা অনুসরণ ও পালন করা।আমরা জানি, রাষ্ট্র পরিচালনায় যারা রয়েছেন তাদের সক্ষমতা নেই জনগণকে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার , মানুষকে ঘরে বসিয়ে এই দুর্যোগকালীন সময়ে আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করা। তবে রাষ্ট্র সর্বোচ্চ শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান আপনাদের হাতের সেই শক্তিটুকু অন্তত ব্যবহার করুণ তাদের বিরুদ্ধে যারা সংকটকে কেন্দ্র করে মানুষকে হয়রানী ও হতাশায় নিমজ্জিত করে।যারা ব্যবসা পেশায় জড়িত আছেন তাদের অনেক বড় ভূমিকা রাখার সময় এখন।মানুষের বিপদকে পূঁজি না করে সঠিক মূল্যে পণ্য সামগ্রী সরবরাহ করে মানুষের পাশে দাঁড়ান।কারণ এই মুহূর্তে অর্থ মোহে থেকে কি হবে, যদি আপনি এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মারা যান তাহলে আপনার অর্থ ব্যাংকে পরে থাকবে শুধু আপনি থাকবেনা এই পৃথিবীতে।ঊনপঞ্চাশ বছর পূর্বে স্বাধীনতা যুদ্ধে সময় আমরা রাজাকার, আল বদরদের দেখেছি। তাদের বংশধরেরা এখনো রয়েছে আমাদের সমাজের মধ্যে,কিন্তু কারা তারা? তাদেরকে চেনার সময় এসেছে নতুন করে।

যারা প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে মুনাফা লুটবে।

যারা মানুষের বিপদকে পূঁজি করে চিকিৎসা বাণিজ্য করবে।

করোনা ভাইরাস মোকাবেলাকে লক্ষ্য করে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত অর্থ যারা চুরি করবে।

এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলাও আমাদের মহান দায়িত্ব।

মঙ্গলবার, ১০ মার্চ, ২০২০

করোনা ভাইরাস এবং প্রসঙ্গ মৃত্যু আতংক

করোনা ভাইরাস নিয়ে আমাদের মধ্যে মৃত্যুর ভয় জেগে বসেছে।অথচ,কয়েক বছর পর পর কোননা কোন নতুন ভাইরাসের আক্রমণে অসংখ্য মানুষ মৃত্যু বরণ করে।কোন এক সময় প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়।ভাইরাসের ভয়ংকর আক্রমণ কোন এক সময় মানুষ প্রতিহত করতে সক্ষম হয়।কিন্তু প্রথম দিকে ভাইরাসের অতর্কিত হামলায় অপ্রস্তুত থাকায় অসংখ্য মানুষকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুকে বরণ করে নিতে হয়।ভাইরাসের কথা বাদ দিলাম,যখন ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ট্রেন, বাস, বিমানে উঠেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত গন্তব্যে না পৌঁছুবেন ততক্ষণ মৃত্যু আপনার পাশাপাশি বসেই অবস্থান করে। কারণ দুর্ঘটনার কবলে যে কোন মুহূর্তে মৃত্যু আঘাত হানতে পারে।সারা জীবন পড়াশুনা করেছেন, সুন্দর জীবিকা অর্জন করেছেন, পরিপাটি বাড়িঘরে বসবাস করেন অথচ যে কোনো সময় দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা বা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসনের ভয়ংকর থাবায় আপনার সাজানো গোছানো জীবন মুহূর্তেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। যা আমাদের চলমান বিশ্বের প্রাত্যহিক ঘটনা।কত শিশু জন্ম গ্রহণ করার পর পৃথিবীতে কয়েক বছর অবস্থান করে পূর্ণ জীবনের স্বাদ গ্রহণ ছাড়াই বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।ভাইরাসের কারণে মৃত্যু ভয়, অথচ আমরাই প্রতিদিন অধিক মুনাফার আশায় খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীতে ভেজাল মিশিয়ে একে অপরের জন্য প্রতিদিন মৃত্যুর ফাঁদ তৈরি করে রাখছি।পৃথিবীটা মানুষের জন্য অথচ এই পৃথিবীটাকে অনিরাপদ করার জন্য মানুষই প্রধানত দায়ী। প্রতিদিন পৃথিবীর কোথাও না কোথাও ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য এক ধর্মের মানুষ খুন করছে অন্য ধর্মের মানুষকে,এক রাষ্ট্র হামলা চালাচ্ছে অন্য রাষ্ট্রের উপর,বর্ণবাদী সহিংসতায় এক বর্ণের মানুষ খুন করছে অন্য বর্ণের মানুষকে।কিন্তু, করোনা ভাইরাসের বিশেষ প্রীতি নেই বিশেষ কোন ধর্ম,বর্ণ বা রাষ্ট্রের প্রতি।অদৃশ্য করোনা ভাইরাস যুদ্ধ ঘোষণা করছে পৃথিবীর দৃশ্যমান মানুষের সঙ্গে।যখন সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো নিজ দেশের মানুষের জৌলুশপূর্ণ জীবন যাপন নিশ্চিত করার জন্য যুদ্ধবিগ্রহ বাধিয়ে অন্য দেশের মানুষকে বাস্তুহারা করে দিচ্ছে।ঠিক সেই মুহূর্তে করোনা ভাইরাস কিছু মানুষের জীবন কেড়ে নিলেও পৃথিবীর সমগ্র মানুষ, ধর্ম, গোত্র,বর্ণ ও রাষ্ট্রকে একত্রিত করে একটি বার্তা দিচ্ছে, তাহলো শুধু পৃথিবীতে একা বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম নয়, সংগ্রাম হোক পৃথিবীর সমগ্র মানুষের সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার সম্মিলিত সংগ্রাম।মানুষ বাঁচলেই ধর্ম থাকবে,বর্ণ থাকবে, রাষ্ট্র ব্যবস্থা টিকে থাকবে।এই ধরণী টিকে থাকবে মানুষের নেতৃত্বে।মৃত্যু অনিবার্য, মৃত্যুকে সঙ্গে করেই আমাদের বসবাস,আমাদের জন্মই হয়েছে মৃত্যুকে সঙ্গী করে।তাই মৃত্যু ভয়ে বেঁচে থাকা নয়। যত দিন বাঁচি সেই বেঁচে থাকাটা হোক সুন্দর। সেই লক্ষ্যে আমাদের সচেতনতা, সাবধানতা এবং একে অপরের প্রতি সৌহার্দ্য ও সম্মান হোক বেঁচে থাকার মূল ব্রত।সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে তুলি মানব বসতির শান্তির পৃথিবী।