সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯

মানব জনমের সাফল্য

সামাজিক সাফল্য আর মানুষ হয়ে জন্ম নিয়ে মানব জনমের সাফল্য অর্জনের মধ্যে পার্থক্যের ফারাক বিস্তর। সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা অর্থকড়ি,ধন সম্পদ উপার্জনকারী মানুষকে সফল মানুষ বলে ভেবে থাকি।বৈধ পথে সম্পদ উপার্জনকারী ব্যক্তির সম্পদ যদি ব্যক্তি ,সমাজ ও রাষ্ট্রের উপকারে আসে তবে অবশ্যই তিনি সফল মানুষ। কিন্তু সামাজিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে অবৈধ পথে উপার্জিত সম্পদের স্তুপের উপর দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ ব্যক্তি জীবনে সবচেয়ে ব্যর্থ।কারণ এমন ক্ষমতাবান মানুষদের সমাজে বাহ্যিক গ্রহণযোগ্যতা ও সম্মান থাকলেও সর্বস্তরের মানুষের অন্তরের ভালোবাসা থাকেনা।বরং এমন মানুষের পতন হলে সমাজে আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

মানব জনমের সফলতার মান নির্ণয় হয় সমাজের মানুষের নিকট গ্রহণযোগ্যতা ও তাদের অন্তরের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশের উপর।মানুষের নিকট গ্রহণযোগ্যতা ও কারো অন্তরের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ একজন মানুষের জন্য তখনি প্রকাশ পায় যখন কেউ সত্যবাদিতা, ন্যায় এবং সততার ভেতর দিয়ে জীবন প্রবাহিত করে সমাজে আলো ছড়ায়।এমন মানুষের আলোর বিচ্ছুরণে আশেপাশের মানুষের পথ চলা সহজ হয়ে যায়।

বৈদ্যুতিক আলোর ঝলকানি পৌঁছে গেছে দেশের সব জায়গায় তবুও আমাদের সমাজে পথ চলা দিন দিন কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে পড়ছে, কারণ আলো ছড়ানো মানুষের সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে ...।।

মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯

জীবনের সুখ,সংকট ও টানাপোড়ন

জীবনের সংকট ও টানাপোড়নের সময়গুলো মানুষকে নানা ভাবে কষ্ট দেয়, কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেই মানুষ স্বপ্ন দেখতে শেখে এবং সামনে এগিয়ে যেতে সাহসী হয়ে ওঠে।এমন সময় একে অপরের উপর নির্ভরশীল হয়ে জড়াজড়ি করে মিলেমিশে জীবন যাপন করে।এই দুর্যোগকালীন সময়ে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মধ্যে ঘনত্ব থাকে ।
মানুষ জীবনের সংকট ও টানাপোড়ন ঘোচাতে, বাধা বিপত্তি মাড়িয়ে জীবনের কোন এক পর্যায়ে স্বনির্ভর হয়ে ভোগের সুখ সহজলভ্য করে তোলে।এ সময়,অতি আত্মনির্ভরতায় অনেকের মনের মধ্যে আত্মঅহংকার উদয় ঘটে, ফলে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কমতে থাকায় আত্মার সম্পর্কগুলো হালকা হতে থাকে, এমন সময় মানুষ সম্পর্কের দূরত্ব বাড়ানোর সাথে সাথে নিজের একাকীত্বও বাড়াতে থাকে।
জীবনের বিরূপ পরিস্থিতিগুলো কষ্টদায়ক হলেও এর মধ্যে গভীরতর আত্মার সুখ নিহিত থাকে, যা ভবিষ্যৎ পার্থিব সুখের আশায় গুরুত্বহীন ভাবে হেলায় পাড়ি দিয়ে আমরা আত্মবঞ্চিত করে থাকি।
সু-সময়ের পার্থিব সুখের মধ্যে যখন আত্মার সুখ খুঁজি, অনেক সময় তা জীবন থেকে অনেক দূরে অবস্থান করে।

ডাকাতি

পৃথিবীতে দুই শ্রেণীর মানুষ ডাকাতি করে।এক শ্রেণী বেঁচে থাকার অস্তিত্বের জন্য সরাসরি অস্ত্র ঠেকিয়ে অন্যের সম্পদ লুটে নেয়, আর এক শ্রেণী ভোগ বিলাসী জীবন ও আধিপত্যের জন্য মস্তিষ্ক এবং আইনকে অস্ত্র বানিয়ে অন্যের সম্পদ কেড়ে নেয়।
প্রথম শ্রেণীর ডাকাতদের কর্ম ও নৃশংসতা চোখে দেখা যায় এবং বিত্তহীন শ্রেণী বলে আমরা এদেরকে প্রকাশ্যে ঘৃণা করে থাকি। সাধারণত ন্যায় অন্যায়ের নীতি কথায় ওদেরকেই উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়।

কিন্তু পরের শ্রেণী স্যুট কোট পরে কৌশলে শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিনা রক্তপাতে ডাকাতি করে বলে এদেরকে প্রকাশ্যে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখা হয়না, বরং এদের হাত অর্থ কড়ি দিয়ে ভরা থাকে বলে সমাজ এই শ্রেণীর ডাকাতদের সম্মান ও সমীহ করে থাকে।অর্থাৎ এক শ্রেণী ডাকাতি করে ঘৃণা অর্জন করে ,আর এক শ্রেণী ডাকাতি করে সম্মান অর্জন করে শুধুই কর্ম প্রয়োগের ভিন্নতা ও সামাজিক মানসিকতার কারণে।দেশে প্রথম শ্রেণীর ডাকাতদের অস্তিত্ব অনেকটাই বিলুপ্তির পথে,কিন্তু দ্বিতীয় শ্রেণীর সম্মানিত ডাকাতদের আধিপত্য সর্বত্র জুড়ে …যারা ব্যক্তি,সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পদ প্রতিনিয়ত লুটে নিচ্ছে …।।

কথা

বস্তুগত কোন কিছুর দ্বারা যদি কেউ আঘাত পায়, তাহলে সেই আঘাতের ব্যথা শুধু শরীর অনুভব করে এবং কোন এক সময় ব্যথা নিঃশেষ হয়,ক্ষতও শুকিয়ে যায়।কিন্তু,কেউ যদি কারো কথা ও আচরণ দ্বারা আক্রান্ত হয় তাহলে সেই আঘাতে মানুষের হৃদয় ও শরীর উভয়ই পীড়িত হয়।চিকিৎসাহীন এই ব্যথা থেকে মানুষ কখনো আরোগ্য লাভ করে না।কোন এক সময় ব্যথা কমে গেলেও ক্ষতটা আমৃত্যু হৃদয়ের এককোণে থেকেই যায়।ক্ষেত্র বিশেষ মৃত্যুও ডেকে আনে।
কথা ও আচরণ যদিও দৃশ্যমান নয় তবুও ইহা বুলেটের চেয় ভয়ংকর এবং শক্তিশালী।যে জটিল সমস্যার সমাধান দীর্ঘ যুদ্ধ ও ভারী অস্ত্রের দ্বারা সুরাহা করা সম্ভব নয়, সেই সমস্যার নিষ্পত্তি শুধু মুখের কয়েকটি কথায় হতে পারে। আবার, শুধু দুটো ঠোটের মধ্য থেকে বেরিয়ে যাওয়া কয়েকটি বাক্য পৃথিবীর অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র এবং বিশ্বের স্থিতিশীলতা অনেকটাই আমাদের মুখের কথার উপর নির্ভরশীল।
প্রতিটি ক্ষেত্রের জয় পরাজয় নির্ভর করে মুখের কথার ওপর।
অর্থাৎ, মুখেই জয়, মুখেই ক্ষয়।
আমাদের ব্যক্তি জীবনের প্রতিটি ক্ষণ,প্রতিটি ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত কথা বলা ও অন্যের প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে।
দিন চলে যায় কিন্তু কথা থেকে যায় ......।।

রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৯

রক্তের লাল রঙয়ে কতটা রাঙ্গিয়েছ তোমার পা ……?

যতবার,   তুমি উপরে উঠতে চেয়েছ
ততবার,    আমি পিঠ পেতে দিয়েছি,
যতবার,    স্পর্শ করেছ তোমার প্রত্যাশার সিঁড়ি
ততবারই,  চাবুকের আঘাতে দাগ কেটে ছবি এঁকেছ
              আমার প্রশস্ত বুকে।
তোমার সুউচ্চ চূড়া থেকে
এবার নিচের দিকে তাকিয়ে দেখ
তোমার পায়ের ভরে কতটা ক্ষত বিক্ষত হয়েছে সিঁড়িগুলো,
রক্তের লাল রঙয়ে কতটা রাঙ্গিয়েছ তোমার পা ……?